সবকিছুরই তো শেষ আছে। জীবনের, জন্মের, প্রাণের… শেষ আছে সুন্দরের, যন্ত্রণার, কষ্টের, দুঃখেরও। কিছু সাময়িক সমাপ্তি, কিছু চিরকালীন। ব্লগে লিখতাম মনের খোরাক হিসেবে। একসময়ের সময় কাটানো, মনের লেখাগুলোকে জমা করে রাখা। ফেসবুক আসার পর সেই সময়টুকু মনে হয় সমস্ত প্রজন্ম থেকেই উঠে গেছে। আমিও টুকটাক সময় পেলে ফোকাস করিনি অনেককাল। এখানে ওখানে অনেক বছর সময় ক্ষেপন হয়েছে জীবনের প্রয়োজনে। আমি মোটামুটি মানসিকভাবে ক্লান্ত। ক্লান্তি আমার নানানভাবে নানান কালে ছিলো, এখনো আছে, আগামীতেও হয়ত থাকবে।
আমার লেখাগুলোয় ইদানিং একটা মনোটোনি পাই। নিজেরই বিরক্ত লাগে। আর লিখবো না হয়ত। আবার লিখতেও পারি। সব শেষেরই আরেকটা শুরু থাকে। আবার, বাড়াবাড়ি কিছুই মানুষকে আনন্দ দেয় না। অতি সুখেরও ক্লান্তি আছে, বিরক্তি আছে। অনন্তকালের জীবনে শুনেছি ক্লান্তি থাকবে না। সেখানে স্বস্তি পেলে হয়। দুনিয়ার জীবনের এই অংশটায় আমি খুব সচেতন ছিলাম আমার ট্রানজেকশনে, চেয়েছিলাম অন্যদের মনে কষ্ট না দিতে, অর্থপূর্ণ জীবন কাটাতে…
আমি একটা ‘পারফেক্ট’ টাইপ মানুষ হতে চেয়েছিলাম। অথচ কে না জানে, এই পৃথিবীতে অন্যতম বড় ভুল হলো নিজের প্রতি এই এক্সপেকটেশান। তবু দিনশেষে বোধহয় একটা মানুষের সবচেয়ে আনন্দ হয় এটা ভাবতে যে ‘আমি ওনেস্ট ছিলাম জীবনভর’… সে-ই বা কম কী?
লেখালেখি খুব ভালো কিছু কিনা জানিনা। আমি অনেক লিখেছি জীবনে। মন খারাপের সময়েই লেখা বেশি হয়েছিলো আমার। কিন্তু সচেতন ছিলাম মন খারাপের কারণ না হতে। এই তো। কত মানুষ ছিলেন যারা ধ্যানী, কর্মী, ত্যাগী… খুব কমই হয়ত লিখেছেন। যারা লিখেছেন তাদের লেখাগুলোও কি আদৌ রেখাপাত করে আমাদের মাঝে? আমরা তো সবাই যার যার ইচ্ছে অনুযায়ীই চলি, পড়ি, শিখি।
ভালো থাকুক পৃথিবীর মানুষগুলো। যদিও আমার মনে হয় আগামীর মানুষেরা মূলত বিষণ্ণ, স্বার্থপর, একগুঁয়ে, সন্দেহপূর্ণ হবেন। তবু আমার হৃদয়ের শুভকামনা সেই আনহ্যাপি মানুষদের প্রতি।
“তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে, তারার পানে চেয়ে চেয়ে
নাইবা আমায় ডাকলে… ”
১১ এপ্রিল, ২০১৮